ডেইলি শেয়ারবাজার রিপোর্ট: ফ্লোর প্রাইসের কারণে শেয়ারবাজার অকার্যকর হয়ে পড়ে রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, যদিও এটি তুলে দিলে শেয়ারের দাম আরও কমে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তবে এই ঝুঁকি নিতে হবে। পুরোপুরি ভাবে বাজার চালু না করলে বোঝা যাবে না আসলে বাজারে কি হচ্ছে। আমরা বুঝতে পারব না কী হচ্ছে।
এ ব্যাপারে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেছেন, ফ্লোর প্রাইসের কারণে অনেকটা অকার্যকর শেয়ারবাজার। আগে ১০ শতাংশ সার্কিট ব্রেকার রেখে বাজারে লেনদেন হয়েছে। এখন ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে বাজারে নতুন সার্কিট ব্রেকার দেওয়া হয়েছে। এতে কেউ লেনদেন করতে পারছে না। বিদেশিরা বাজারে বিনিয়োগ করছে না। পৃথিবীর কোথাও এটা নেই।
বাজার স্থিতিশীল করতে হলে দ্রুত ফ্লোর প্রাইসের এই সার্কিট তুলে দিতে হবে। আবু আহমেদ বলেন, সাপ্লাই-ডিমান্ড ঠিক না থাকলে বাজার ঠিক থাকে না। এখন শেয়ারবাজারে সাপ্লাই-ডিমান্ড কোনোটাই ঠিক নেই। বিভিন্ন কোম্পানির মুনাফা কমেছে। ভবিষ্যৎ মুনাফাও কমার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কোম্পানির মুনাফা না হলে বা কম হলে কেউ লভ্যাংশ দিতে পারবে না। করোনাকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় নতুন সার্কিট দেওয়া হয়েছিল। দুই মাসের বেশি বন্ধ ছিল শেয়ারবাজার। এখন যেহেতু খুলে দেওয়া হয়েছে তাই স্বাভাবিক লেনদেন হতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে এভাবে আটকে রাখলে আরও ক্ষতি হবে শেয়ারবাজারের। তিনি আরও বলেন, বাজার থেকে ক্যাশ চলে যাচ্ছে। আগে যে জুয়া খেলা বলতাম সেটাও নেই। কেউ লেনদেন করতে পারছে না। জুয়া খেলা কীভাবে হবে। সরকার সরকারি ব্যাংকগুলোকে কাজে লাগাতে পারত। তারা বাজারকে সাপোর্ট দিলে বাজার অবশ্যই ঘুরে দাঁড়াবে। বিশ্ব বাজারের সঙ্গে সংগতি রেখে প্রয়োজনে ৫ শতাংশ পর্যন্ত আপ ডাউনের সার্কিট রেখে হলেও বাজারে স্বাভাবিক লেনদেন চালু করা উচিত।
এদিকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেছেন, করোনা সংকটের কারণে বেশিরভাগ কোম্পানির উৎপাদন বন্ধ। আর্থিক সংকটে রয়েছে দেশের ব্যাংকিং খাত। এর মধ্যে সরকার বাজেটের ঘাটতি মেটাতে ব্যাংকিং চ্যানেল থেকে প্রচুর টাকা নেবে। এতে বেসরকারি শিল্প খাতে অর্থ সরবরাহ কমবে। যে প্রণোদনা দিয়েছে সেটা বাস্তবায়ন করতে হলে পুরনো ঋণ আদায় করতে হবে ব্যাংকগুলোকে।
কিন্তু যেখানে উৎপাদন নেই। ফলে কেউ সহজে টাকা ফেরত দিতে পারাটা সম্ভব নাও হতে পারে। বাজারে সার্বিকভাবেই তারল্য সংকট বাড়বে। এতে শেয়ারবাজারেও প্রভাব পড়বে। তিনি আরও বলেন, শেয়ারবাজার এখন পুরোপুরি চালু করা উচিত। যেভাবে চলছে সেটা সাময়িক চলা। একটি সিলিং দেওয়া আছে। সিলিং তুলে দিতে হবে। সিলিং রেখে স্বাভাবিক লেনদেন হচ্ছে না। তবে সিলিং তুলে দিলেও একটি ঝুঁকি আছে। শেয়ারের দাম আরও কমে যেতে পারে। তবে এই ঝুঁকি নিতে হবে। পুরোপুরি ভাবে বাজার চালু না করলে আমরা বুঝতে পারব না কী হচ্ছে।
ডেইলি শেয়ারবাজার ডটকম/মাজ./নি