Home / সম্পাদকীয় / কোম্পানিগুলোয় পরিবারতন্ত্র: স্বতন্ত্র পরিচালক আঁইওয়াশ মাত্র

কোম্পানিগুলোয় পরিবারতন্ত্র: স্বতন্ত্র পরিচালক আঁইওয়াশ মাত্র

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির স্বতন্ত্র পরিচালকরা নিজেদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারছেন না। তারা এখন অনেকেই পরিবারতান্ত্রিক সংস্কৃতির মধ্যে পড়ে গেছেন। সেখানে থেকে বেরিয়ে এসে কোম্পানিগুলোতে করপোরেট গভর্ন্যান্স প্রতিষ্ঠায় কাজ করছেন না।

বিনিয়োগকারী ও সরকারের স্বার্থ রক্ষার জন্য কোম্পানিতে স্বতন্ত্র পরিচালক রাখা হয়েছে। তবে তারা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছেন না। পরিবারতান্ত্রিকতার চাপে তারা অনেক বিষয় দেখতে পারছেন না। কারণ তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর পরিচালনা পর্ষদের ক্ষমতা এখনও পারিবারিক সদস্যদের হাতে রয়েছে। স্বতন্ত্র পরিচালকরা এখনো তাদের ক্ষমতা পুরোপুরি আরোপ করতে পারছেন না।

ফলে তারা কোম্পানির অডিট রিপোর্টসহ বিভিন্ন বিষয়গুলো দেখার কথা থাকলেও সঠিকভাবে দেখতে পারছেন না। বরং এসব পরিচালকদের অনেক সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। এসব সমস্যার মধ্যে থেকেও তারা কমিশনের সঙ্গেও কথা বলছেন না। এতে সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। স্বতন্ত্র পরিচালকরা কমিশনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন না। সমস্যাগুলোও জানাচ্ছেন না।

বাংলাদেশে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কেম্পানিগুলোর পরিচালনা পর্ষদে মাত্র ২০ শতাংশ স্বতন্ত্র পরিচালক রয়েছে। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ সারাবিশ্বে তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে স্বতন্ত্র পরিচালকের সংখ্যা আরও বেশি। এতে ওই সব দেশের কোম্পানিগুলোতে করপোরেট গভর্ন্যান্স প্রতিষ্ঠার হার বেশি। এছাড়া বিভিন্ন দেশের কোম্পানিতে স্বতন্ত্র পরিচালক ইন্টারভিওয়ের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে তার সুযোগ নেই। ইস্যুয়ার কোম্পানিতে তাদের স্বতন্ত্র পরিচালক নির্বাচনের ক্ষেত্রে আগে কোন নিয়মই ছিলনা। এখন নিয়মের আওতায় আনা হচ্ছে। ২০১২ সালে বিএসইসি কর্পোরেট গভর্ন্যান্স জোরদার করার জন্য ৬০ টি সেকশনে ৯৫টি শর্ত অন্তর্ভুক্ত করেছে। সেখানে আগে ৫টি সেকশনে ৩৭টি শর্ত ছিল। ২০১৮ সালে যে কর্পোরেট গভার্ন্যান্স কোড করা হয়েছে সেখানে ৯টি সেকশনে ১৬৬টি শর্ত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এখন শর্তগুলো প্রতিপালন হচ্ছে। কিন্তু কর্পোরেট গভর্ন্যান্স তেমন ভাবে পালন হচ্ছেনা।

ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অফ সিকিউরিটিজ কমিশন (আইওএসসিও) নিয়মনীতি অনুসরণ করে এনআরসি কমিটি দেওয়া হয়েছে। চার্টার্ড একাউন্টটেন্স, অডিট ফার্মগুলোতে কঠোরতা গ্রহণ করা হয়েছে। যার ফলে এখন একটা প্রত্যাশা এবং বিশ্বাসের জায়গা তৈরি হয়েছে।

কিন্তু কোম্পানিগুলো মনে করছে গভর্ন্যান্স ছাড়াই ব্যবসায় লাভ করা যাচ্ছে। নিজেদের ইচ্ছেমতো সবকিছু এদিক-সেদিক করা যাচ্ছে। আর বিএসইসি যেহেতু গভর্ন্যান্স পরিপালন হচ্ছে কিনা তার বাস্তব পরিদর্শনের ব্যবস্থা রাখেনি তাই আগে যেভাবে চলছিল এখনো তাই চলছে। পুরনো মদ নতুন বোতলে ভরে পান করা আর কি।

 

ডেইলি শেয়ারবাজার ডটকম/রু/এম

Check Also

ফ্লোরের পাশাপাশি ২ শতাংশ সার্কিট বহাল রাখা হোক

বিনিয়োগকারীদের বাঁচাতে গেল মাসের শেষের দিকে পুঁজিবাজারে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *