ডেইলি শেয়ারবাজার রিপোর্ট: প্রাথমিক গণ প্রস্তাবের (আইপিও) প্রক্রিয়ায় থাকা এনআরবি কমার্শিয়াল (এনআরবিসি) ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান স্পন্সর ইঞ্জিনিয়ার ফরাছত আলীকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তার বিরুদ্ধে বেনামে ঋণ দেওয়া, এনআরবিসি ব্যাংকের পরিচালক না হয়েও অন্য ব্যাংকের পরিচালককে পর্ষদ সভায় অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করার অভিযোগ রয়েছে যার সত্যতা পেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
যে কারণে আগামী দুই বছর যেকোনও ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক পদ থেকে তাকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ২০২২ সালের ২১ জুন তার নিষিদ্ধের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আবার তিনি ব্যাংকিং জগতে ফিরে আসবেন সেটাই স্বাভাবিক। এতে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়ায় এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকে বিনিয়োগ ঝুঁকিতে পড়বে কিনা সে বিষয়ে সংশয়ে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
কারণ বর্তমান ব্যাংকিং জগতে সবচেয়ে বড় আতঙ্কের নাম খেলাপী ঋণ। আর এই খেলাপী ঋণ বাড়ানোর ক্ষেত্রে বেশিরভাগ ব্যাংকের পরিচালকরাই নামে-বেনামে ঋণ দিয়ে ব্যাংককে তলাবিহীন ঝুঁড়িতে পরিণত করে থাকেন। এতে বিপদে পড়ে যান বিনিয়োগকারীরা। কারণ আমানতকারীদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন পলিসি থাকলেও বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে লিক্যুইডেশনের (অবসায়ন) মতো জটিল প্রক্রিয়া ছাড়া অন্য কোন পলিসি নেই বললেই চলে।
ব্যাংকটি আবার আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের মতো হবে না তো? কিংবা ইউনাইটেড এয়ারের মতো মালিক পক্ষ হবে না তো- সে বিষয়ে ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নানা প্রশ্ন উঠে এসেছে। এছাড়া রিংসাইন টেক্সটাইল, তুংহাই নিটিং, সিএন্ডএ টেক্সটাইল, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালসের মতো ভুয়া কোম্পানি যে ইস্যু ম্যানেজার এনেছে তাদের হাত ধরেই এনআরবি কমার্শিয়ার ব্যাংক মার্কেটে তালিকাভুক্ত হতে যাচ্ছে। যে কারণে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কটা একটু বেশিই বটে।
তাই ব্যাংকটির বর্তমান কার্যক্রম নিয়ে কোন সন্দেহ না থাকলেও ভবিষ্যত নিয়ে নানা সংশয় তৈরি হয়েছে। কারণ পুঁজিবাজারে আসার সময় সব কোম্পানিকেই ভালো পারফরম্যান্স করতে দেখা যায়। কিন্তু তালিকাভুক্তির এক দুই বছর পরই কোম্পানির আসল চিত্র দৃশ্যমান হয়। আর তালিকাভুক্ত কোম্পানির অগ্রগতি কেমন হবে তা নির্ভর করে কোম্পানির মালিকপক্ষের আচরণের ওপর। আর এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকে যেহেতু বিতর্কিত মালিক রয়েছেন তাই এ ব্যাংকের ভবিষ্যত কি হবে কিংবা বিনিয়োগকারীদের পুঁজি হারানোর আশঙ্কা থাকবে কিনা অথবা শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর ব্যাংকটির ডিভিডেন্ড পলিসি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সে বিষয়ে না প্রশ্ন থাকলেও তার উত্তর সময় আসলেই দেখা যাবে।
ডেইলি শেয়ারবাজার ডটকম/মাজ./নি